78 ektara

কমলা রঙের সাজানো বাউলের বেশ নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে কৃষ্ণদাস বাউল। কৃষ্ণদাসের সাজগোজ দেখে বোষ্টুমি কৃষ্ণদাসী এগিয়ে আসে–“এই সাত সকালে কোতায় বেরুচ্চো?” হাসতে হাসতে কৃষ্ণদাস বলে–“জানিস না আজ মকর সংক্কান্তি! জয়দেবের মেলা।” কৃষ্ণদাসীর মুখ তেউলে হাঁড়ি।

–“অনেক তো মেলা করলে! এবার রাকো। পেটের যোগাড় করো। ভিক্ষেয় বেরোও।” কৃষ্ণদাস তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। –“ছি: ছি:, ও-কতা  মুকে আনলি কি করে?  জয়দেব আমার আদিগুরু। মেলায় গেয়ে তেনাকে আজ আমাদের ছেদ্দার সাতে পেণ্ণাম করার দিন। একটা দিন উপোস দিলে এমন কিচু খেতি হবে নি।”

কয়েক মূহূর্ত চুপ থেকে কৃষ্ণদাসী কৃষ্ণদাসের চোখে  স্থির দৃষ্টি রেখে বলে–“আমি তোমার সঙ্গে যাবো জয়দেবের মেলায়। কৃষ্ণদাস শশব্যস্ত হয়ে ওঠে। একটা অবাঞ্ছিত বস্তু এঁটুলির মত গায়ে সেঁটে যাবার ভয়ে সে উদ্বিগ্ন চঞ্চল হয়ে ওঠে।–“না-না, তোকে আর কষ্ট করে যেতে হবেনি। তুই ঘরে থাক। আমি একাই যাই।”

কৃষ্ণদাসী জ্বলে ওঠে। –“আমার জানতে ছাপি নেই। মেলায় ছেদ্দা-ভক্তি করতে যাচ্চো, না গুষ্টির পিণ্ডি দিতে যাচ্চো! মনে করচো ডুবে ডুবে জল খেলে শিবের বাপও টের পাবে নি, না? আমি জানি তুমি কিজন্যি মেলায় মেলায় ঘোরো। পেথমকার  বোষ্টুমিকে একোনো তুমি মন থেকে ভুলতে  পারোনি। তুমি মেলায় মেলায় তারই খোঁজ করতি যাও।”

কৃষ্ণদাসীর মুখের কথাগুলো কৃষ্ণদাসের মরমে কাঁসরের মত বেজে ওঠে। বুকটা হাহাকার করে। এতদিনের গোপন অব্যক্ত কথাটা কৃষ্ণদাসী ঠিক ধরে ফেলেছে। সেদিনের ঘটনাটা বেশ মনে পড়ে কৃষ্ণদাসের। 

মহাপ্রভুর জন্মদিনে সেবার বোষ্টুমি গুরুদাসীকে সঙ্গে নিয়ে ভিক্ষেয় বেরিয়েছিল। বোষ্টুমির খঞ্জনীর সাথে নিজে একতারা বাজিয়ে বীরচাঁদপুরে কাঁধের ঝুলি ফুলে ফেঁপে ঢোল। তাও কম করে পঁচিশ ত্রিশ কেজি চাল, নগদ দুশো টাকা। কৃষ্ণদাসের মনে আনন্দ আর ধরে না। সারা রাস্তা খোসমেজাজে বোষ্টমীর সাথে গল্প আর মাঝে মাঝে গুনগুনিয়ে গান গাইতে গাইতে এসেছিল। মাঝরাস্তায় একদল নিষ্পাপ বালকের দল আটকেছিল। দুহাত তুলে আনন্দে লাফাতে লাফাতে বলেছিল–“ও কেষ্টকাকু, সে-সেই গানটা একবার গাও না! নিরাশ করেনি। একতারা বাজিয়ে মনের আনন্দে কৃষ্ণদাস গান ধরেছিল—

“ছ’টা বাঘ ঢুকেছে ঘরেতে।

তারা বাগ মানে না, ধরা দেয় না, ফেলল বিষম দায়েতে।।

মারবার তরে ধনুক নিলাম তীর নিলাম দুটো হাতেতে,

কে একজনা করলে মানা, বধো নাকো প্রাণেতে।

বললে এদের তুষ্ট করে রাখ মিষ্ট কথাতে………”

গান শেষ করে একের পর এক বালকগুলোকে কাছে টেনে আদর করেছিল। ছেলেগুলো অবাক চোখে কৃষ্ণদাসের একতারার দিকে চেয়েছিল। তারা শুনেছে ঐ একতারার মধ্যেই নাকি কৃষ্ণদাস বাউলের প্রাণ আছে। একতারা ভেঙে গেলে নাকি কৃষ্ণদাসও মরে যাবে। কৃষ্ণদাস চোখ বন্ধ করে ভক্তিভরে দুহাতে একতারাকে কপালে ঠেকিয়ে হনহনিয়ে পা চালায়। পিছনে গুরুদাসী। ডেরায় ফিরতে ওদের বেলা গড়িয়ে যায়। দুজনের কাঁধে ঝোলানো ঝুলি আজ ভিক্ষার সামগ্রীতে পূর্ণ। দুজনের চোখে মুখে আনন্দ। উভয়ের আনন্দের মধ্যে বিস্তর ফারাক। একজন আনন্দিত তার কৃতিত্বের অহংকারে আর একজন আনন্দিত তার প্রাণের ঠাকুরের মুখের হাসিতে। ডেরায় ফিরে গুরুদাসী নিজের ঝুলি কাঁধ হতে নামিয়ে বাউল ঠাকুরের ঝুলি কাঁধ হতে নামায়। দুটি পা জল দিয়ে ধুয়ে কাপড়ের আঁচল দিয়ে মুছে দেয়। একগ্লাস জল, হাতের তেলোয় একটু ঝোলা গুড় দিয়ে মাথায় ভাঙা হাতপাখাটা নাড়ে। ক্লান্ত বোষ্টুম কৃষ্ণদাস গুরুদাসীর সেবায় ঠাণ্ডা হয়। কিন্তু না, বেশী- ক্ষণ থাকে না। বিপত্তি বাধে গুরুদাসীর একটু ভুলে।

একতারাকে ঘরে রাখতে গিয়ে পা হড়কে পড়ে গেছে গুরুদাসী। একতারা ছিটকে একেবারে উঠোনে।   আর যায় কোথায়! বিশাল স্তুপীকৃত বারুদের মধ্যে একটা জ্বলন্ত দেশলাই কাঠি। কৃষ্ণদাস আগে  কখনও যা করেনি–জীবনে যা করবে বলে ভাবেনি, তাই করে বসে। চোখ মুখ তার লাল হয়ে  ওঠে। এলোপাথাড়ি চড় আর লাথি মারতে থাকে গুরুদাসীকে। বেহুঁস হয়ে মাটিতে পড়ে যায় গুরুদাসী। রাগে কৃষ্ণদাসের চোখদুটি গনগনে আগুনের মত লাল হয়ে ওঠে। –“আঁ, আমার গুরুর পিতি হতছেরাদ্দি! পাপিষ্টা মেয়েমানুষ। তোর নরকেও থান হবেনি। বাড়ী হতে তুই এক্ষুনি বেরিয়ে যা।”

কৃষ্ণদাসের দুচোখ বেয়ে গড়গড়িয়ে জল পড়ে। বীর-চন্দ্রপুরের বঙ্কিম রায় মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে গুরুদেব তাকে এই একতারাটি হাতে দিয়ে বলেছিলেন– “কেষ্ট, তুই এই একতারাকে সারা জীবনের সাথী করে রাখবি। কখনও কাছছাড়া করবি না। সযত্নে রাখবি। সংসার থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ভোগে নয়, ত্যাগে। এই বৈরাগী একতারাই তোকে মুক্তির পথ দেখাবে।”

সেই থেকে কৃষ্ণদাসের ধ্যান-জ্ঞান একমাত্র সাধনার বস্তু এই একতারা। এর অপমান সে একদম সহ্য করতে পারে না। বেহুঁস হয়ে পড়ে থাকা গুরুদাসীর পাশ থেকে ছিটকে পড়া একতারাকে দুহাতে তুলে বুকে চেপে ধরে কৃষ্ণদাস হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে–“অপরাধ নিও না গুরু। আমি তো তোমায় কোনোদিন অছেদ্দা করি নেই। এই পাপিষ্টা মেয়েমানুষটা তোমার পতি ছেদ্দা ভক্তি হারিয়েচে।”

সূর্য পাটে বসেছে। সন্ধ্যা গড়িয়ে আকাশে কালো অন্ধকার নেমেছে। নেমেছে কৃষ্ণদাসের দুটি প্রাণের সংসারে কালো বিষাদের ছায়া। বোষ্টুমি বোষ্টুমের পা ধরে ক্ষমা চায়। অশ্রুসজল চোখে করুণ মিনতিতে বলেছে–“এবারের মত খেমা কর বাউল ঠাকুর্। তুমি তো আমার প্রাণের ঠাকুর। তোমাকে ছেড়ে আমি কোথায় যাবো! কোথায় আমার যাওয়ার জায়গা আচে বলো? “

কৃষ্ণদাস খেঁকিয়ে উঠেছে–“অজয় নদী আছে, দড়ি আছে, কলসী আছে–তোর যাওয়ার অনেক জায়গা আছে, চলে যা। আমার ছাপ কতা একানে তোর জায়গা নেই।”

পরদিন কাকভোরে কৃষ্ণদাস উঠে দেখে ঘর শূণ্য। গুরুদাসী নাই। চলে গেছে। শুধু বিছানার একপাশে পড়ে রয়েছে তার একতারা। ঘটনাটা আজও কৃষ্ণদাসের মনে ছবি হয়ে ভাসে। বড় অনুশোচনা হয়। লালমাটির পথ ধরে কেষ্টদাস বাউল এগিয়ে চলে দুবরাজপুরের পাকা সড়কের দিকে। বাঁধা কাঁচা সড়ক থেকে নেমে মাঠের আলপথ ধরে। ধানগাছের শিশিরে ভেজা খালি পা নিয়ে হনহনিয়ে ছুটেছে কৃষ্ণদাস। মুখে তার গুনগুনিয়ে গান —

“আমি কোথায় পাবো তারে

আমার মনের মানুষ সে রে

হারায়ে সেই মানুষ, তার উদ্দেশে

দেশ বিদেশ বেড়াই ঘুরে।”

আগে কৃষ্ণদাস শান্তিনিকেতনের মেলা, নানুরের বাউল মেলা জয়দেবের মেলা সব জায়গাতেই পায়ে হেঁটে গেছে। এখন পারে না। বাসে চেপে ভোঁ করে চলে যায়। মজাও লাগে আবার দু:খও হয়। আগে পায়ে হেঁটে সাধ্য সাধনা করে মেলায় পোঁছাতে হত। মনে হত মেলায় আসাটা তার সার্থক হয়েছে। 

কেন্দুলীর মোড়ে বাস থেকে নেমে কৃষ্ণদাস একরকম ছুটতে থাকে। দুপুরের আগে পৌঁছাতে পারলে ব্রাহ্ম’ক্ষণে অজয় নদে মা গঙ্গার দর্শন পাবে। হাজার চেষ্টা করেও  কোনো বছর সে ব্রাহ্ম’ক্ষণে হাজির হতে পারেনি। সে জানে এটা দেখতে পাওয়া বড় পূণ্যের দরকার। এই ব্রাহ্ম’ক্ষণে অজয়ে গঙ্গার আগমণকে কেন্দ্র করে একটা গানও বেঁধেছে। গত বছর মেলায় বাউলদের আখড়ায় গেয়ে খুব নাম পেয়েছিল। প্রবাদ আছে — কবি জয়দেব পঁয়ত্রিশ মাইল পায়ে হেঁটে মাঝে মাঝে কাটোয়ায় গঙ্গা স্নান করতে যেতেন। একবার মকর সংক্রান্তির দিন শরীর অসুস্থতার দরুণ যেতে পারেননি। মনে ভীষণ ক্ষোভ ও দু: খ। অসুস্থ জয়দেব বিছানায় শুয়ে মা গঙ্গাকে স্বপ্নে দেখলেন। মা গঙ্গা বললেন–“এবার থেকে প্রতি মকর সংক্রান্তিতে অজয়ে আমি উজান বেয়ে যাবো। তুই ওখানেই স্নান করবি।” এখনও ব্রাহ্ম’ক্ষণে মূহূর্তের জন্যেও নাকি অজয় উজান বয়। 

কৃষ্ণদাস স্পষ্ট শুনতে পায় মেলা থেকে ভেসে আসা অসংখ্য কৃত্রিম দানবের কণ্ঠে বাউল গান। কৃষ্ণদাসের বাউল মন পেখম তুলে ময়ূরের মত খুশীতে ডগমগ নগ্ন পা দুটো তার নৃত্যের তালে তালে ছুটতে থাকে। শরীরের রক্তে এখন এসেছে তার আনন্দের হিল্লোল। বীরভূম জেলা ও বর্ধমান  জেলার সীমান্তে অজয় নদের তীরে বসা জয়দেবের মেলায় যেন মানুষের মেলা বসেছে। মেলায় ঢোকার আগে কৃষ্ণদাস দুহাতে এক-তারাটা কপালে ঠেকিয়ে গড় হয়ে প্রণাম করে। চোখ বন্ধ করে কি যেন বিড়বিড় করে বলে। কণ্ঠে নেমে আসে সুধাময়ী বাউল গান–

“ধন্য আমি বাঁশিতে তোর

       আপন মনের ফুঁক।

এক বাজনে ফুরাই যদি

        নাইরে কোন দুখ।।

ত্রিলোক ধাম তোমার বাঁশি

আমি তোমার ফুঁক।।”

গাইতে গাইতে কৃষ্ণদাস সামনের আখড়ায় প্রবেশ করে। আখড়ায় তখন চলছে পুরাদমে বাউল গান। অবনী দাস, সুরদাস, জীবন দাস বাউল ছুটে আসে। সকলে একে একে কৃষ্ণদাসকে বুকে জড়িয়ে ধরে অন্তরের অভিবাদন জানায়। কৃষ্ণদাসের দুচোখে আনন্দের বারিধারা। মেলায় অসংখ্য আখড়া থেকে বাউল গান, হরিনাম সংকীর্তন ভেসে আসে মাইকের দানব কণ্ঠ থেকে। একটানা কুড়িখানা গান গেয়ে কৃষ্ণদাস আখড়ার বাইরে বেরিয়ে আসে। এক বোষ্টুমি রসিকতা করে–“কি গো বাউল ঠাকুর, হাঁপিয়ে গেলে নাকি! পাশে বোষ্টুমি থাকলি বোধ হয় এমনভাবি হাঁপাতি হতুনি।”

‘বাউল ঠাকুর’ সম্বোধন শুনে কৃষ্ণদাসের বুকটা ছ্যাঁত্‍ করে ওঠে। তার গুরুদাসীও যে ঠিক এমনিভাবেই ডাকতো। কৃষ্ণদাস বোষ্টুমির মুখের দিকে একনাগাড়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। বোষ্টুমি লজ্জা পায়। –“অমন করি হ্যাংলার মত দেকচো কি! ” কৃষ্ণদাস নীরব। সে এতক্ষণ হয়তো হারিয়ে যাওয়া গুরুদাসীর চোখ দুটোকে এই বোষ্টুমির চোখের মধ্যেই খুঁজছিল। কৃষ্ণদাস আড়ষ্ট গলায় বলে–“তোমার বোষ্টুম ঠাকুর কোথায়?” বোষ্টুমি খিল খিল করে হেসে ওঠে। কৃষ্ণদাস অস্বস্তি বোধ করে।

–“হাসচো যে!”

মুখে কাপড়ের আঁচল চেপে হাসতে হাসতে বোষ্টুমি বলে, “তোমার মুখে আমার বোষ্টুম ঠাকুরের খোঁজ শুনে। বোষ্টুম ঠাকুর আমার কদমখণ্ডীর ঘাটে গেছে। কৃষ্ণদাসের খেয়াল হয়। কপাল চাপড়ায়। ব্রাহ্ম’ক্ষণ শেষ হয়ে গেছে এতক্ষন!  এবারও তার কপাল মন্দ। মনমরা হয়ে  একতারা হাতে মেলায় ঘুরতে থাকে। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা  নামে। কৃষ্ণদাস পাগলের মত ঘুরতে থাকে—দুচোখ দিয়ে কিসব গিলতে থাকে–কি যেন খুঁজতে থাকে।

একবার বেদনাশা বটগাছ, একবার বাউলদের আখড়া, একবার জয়দেবের সিদ্ধাসন–ঘুরন চড়কির মত ঘোরে। উদভ্রান্তের মত একবার শ্মশানের পাশ দিয়ে চলতে চলতে দেখে পিঁপড়ের সারির মত মানুষের দল চলেছে। বিস্মিত হয়ে জিগ্যেস করে–“এই সাঁজের বেলায়  তোমরা কোথায় যাও?” একজন উত্তর দেয়–” কদম-খণ্ডীর ঘাট। শোননি, ওখানে ত্যাগমাতা এসেছেন?

ওনাকে দেখতে যাচ্ছি।”

 

অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাদের পিছু পিছু চলে কৃষ্ণদাস। কদমখণ্ডীর ঘাটে এসে দেখে শীর্ণকায় আলুথালু কেশে এক মধ্যবয়স্কা নারী ধ্যানমগ্না। পরনে গৈরিক বসন। চারপাশে অসংখ্য মানুষের ভিড়। বাউল কীর্তনীয়ার দল  তাদের গানের ডালি সাজিয়ে ত্যাগমাতাকে নিবেদন করছে। কৃষ্ণদাস একতারা তুলে ভিড় ঠেলে একেবারে ত্যাগমাতার সামনে এসে দাঁড়ায়। ধ্যানমগ্না ত্যাগদেবীর কোটরাগত চোখ দুটির দিকে একদৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে কৃষ্ণদাস। একতারা বাজিয়ে গলা ছেড়ে গান ধরতে যায়। কিন্তু পারে না। কম্পিত হস্তের অদক্ষ চালনায় একতারার তার ছেঁড়ে। গানের গলা স্তব্ধ হয়ে যায়। শুধু গলা থেকে একটা অস্পষ্ট চাপা শব্দ বেরিয়ে আসে–“গু-রু-দা-সী!”

ত্যাগমাতা চোখ মেলে তাকান। কৃষ্ণদাস আর দাঁড়াতে পারে না। ভিড় ঠেলে বেরিয়ে আসে। নিমেষে হাতের একতারা ছুঁড়ে ফেলে দেয় অজয়ের বুকে। স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে—-অজয়ের ঘোলা জলে একতারার কালো মুখটা কেমন হাবুডুবু খেতে খেতে দূরে মিলিয়ে যাচ্ছে।

error: Content is protected !!